শুধুমাত্র বিপুল টাকা-পয়সা কিংবা সম্পদের পাহাড়ের মালিক হলেই কেউ অন্যের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে না। নিজেকে অন্যদের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ করে তলার জন্য ব্যক্তির মধ্যে বিশেষ কিছু গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকতে হয়। এসব গুণ বা বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে পারলেই কেবল আপনি নিজেকে অন্যের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে পারবেন।
জীবনে সফল হতে হলে, অবশ্যই নিজের গুরুত্ব বাড়াতে হবে এবং অন্যদের মাঝে নিজেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে জায়গা করে নিতে হবে। আজকের পৃথিবীর সফল ব্যক্তি যারা, তারাও সফল হওয়ার অনেক আগে থেকেই নিজেদেরকে সমাজের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছেন, যা তাদেরকে আজকের এই পর্যায়ে আসতে সাহায্য করেছে।
জীবনে সফল হওয়ার জন্য কেউ যখন কাজ করতে থাকে, ঠিক তখন থেকেই তাকে নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হয়। তা না হলে পরবর্তীতে, নিজেকে সামজের অন্যদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলাটা অনেক কঠিন হয়ে যায়।
তাই নিজেকে সবার মাঝে ধনী তথা সফল ব্যক্তিদের মত গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে চাইলে, এখন থেকেই আপনাকে কাজ শুরু করে দিতে হবে।
কিন্তু কিভাবে নিজের মধ্যে ধনীদের মত আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলে নিজেকে সবার মাঝে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা যায়, সেটা নিয়েই আজকের এই পোস্ট।
কেননা, সবার মাঝে নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর অব্যর্থ ৫টি উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি আজকের এই পোস্টে। আজকে আমি আপনাদের জানাব, কিভাবে নিজেকে সমাজের অন্যেদের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা যায় তার ৫টি সিক্রেট।
সিক্রেট # ১
নিজের ব্রান্ড পারসোনালিটি তৈরি করা
নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার প্রথম ধাপ হচ্ছে, নিজের ব্যক্তিত্বকে ঠিকঠাক করা। অর্থাৎ নিজের জন্য একটি ব্রান্ড পারসোনালিটি তৈরি করা।
আপনার মধ্যে যদি কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব না থাকে, তাহলে আপনি নিজেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে পারবেন না। সুতরাং আপনার ব্যক্তিত্বকে বিশেষায়িত করে তুলুন।
সবাই যেন বুঝতে পারে আপনি কেমন ব্যক্তিত্বের মানুষ। আর একবার আপনার ব্যাক্তিত্ব সবাই বুঝে ফেললে তখন তারা আপনার সাথে সেভাবেই আচরণ করবে।
আপনার ব্যক্তিত্ব যদি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং রেস্পেক্টেড হয়, তাহলে দেখবেন অল্পদিনেই আপনি সবার মাঝে গুরুত্ব পেতে শুরু করেছেন।
সুতরাং সফল হওয়ার জন্য শুরু থেকেই নিজের সঠিক ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলুন।
সিক্রেট # ২
অযথা অতি স্মার্টনেস না দেখানো
ব্রান্ড পারসোনালিটি তৈরি করতে গিয়ে আবার অতি স্মার্টনেস দেখানো যাবে না। এটি একটি খুবই সাধারণ ভুল এবং বেশিরভাগ মানুষই এই ভুলের ফাঁদে পড়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারে না। তাই আপনাকে এটা থেকে সাবধান থাকতে হবে।
অযথা যেখানে সেখানে ইংরেজিতে কথা বলা, কথার মধ্যে নানান রকম জারগন ব্যবহার করা - যা অধিকাংশ লোকেই বুঝতে পারে না, এসব হচ্ছে অতি স্মার্টনেসের লক্ষণ।
তাই যেখানে যে আচরণের দরকার নেই, সেখানে সেই আচরণ করা যাবে না। আপনি যখন কথা বলবেন, তখন আপনার শ্রোতা কারা, তাদের বোঝার ক্ষমতা কতটুকু, ইত্যাদি বিবেচনা করে কথা বলতে হবে।
যেখানে যতটুকু প্রয়োজন সেখানে কেবল ততটুকুই ইংরেজি এবং জারগন ব্যবহার করতে হবে।
আপনি যদি শুরু থেকেই এসব বিষয়ে সাবধান হন, তাহলে আপনার ব্যক্তিত্ব দ্রুতই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে আর আপনিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবেন সমাজের সবার কাছে।
সিক্রেট # ৩
সর্ব মুহূর্তে ভাল শ্রোতা হওয়া
এটি একটি সহজ কাজ, তবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজের গুরুত্ব বাড়াতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই একজন ভাল শ্রোতা হতে হবে।
আন্যের কথা ধৈর্য ধরে শোনার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
আপনি যদি অন্যের কথা ঠিকমত না শোনেন, আর সেটা যদি তারা বুঝতে পারে, তাহলে তারাও আপনার সাথে একই আচরণ করা শুরু করবে, অর্থাৎ কেউ আর আপনার কথাও পুরোপুরি শুনতে চাইবে না।
আর এমন ঘটনা ঘটলে আপনার কোন গুরুত্বই আর কারও কাছে থাকবে না।
তাই নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে অন্যের কাছে তুলে ধরতে হলে আপনাকে আগে সবার কথা শুনতে হবে।
সিক্রেট # ৪
নিজেকে অতিরিক্ত এক্সপোজ না করা
নিজেকে সমাজের চোখে গুরুত্বপূর্ণ করে তলার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। নিজেকে কখনই অন্যদের কাছে অতিরিক্ত এক্সপোজ করা যাবে না।
অর্থাৎ সবার কাছে নিজেকে অতি সহজলভ্য করে ফেলা যাবে না।
আপনি যেন অকারণেই সবারকাছে সহজলভ্য হয়ে না পড়েন, সেজন্য শুরু থেকেই খেয়াল রাখতে হবে। হাত বাড়ালেই যেন আপনার দেখা না পাওয়া যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
আবার একই সাথে সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় আপনাকে যেন পাওয়া যায়, তারও ব্যবস্থা থাকতে হবে।
সবাই যদি খুব সহজেই আপনার কাছে পৌছাতে পারে তাহলে আপনার গুরুত্ব সেভাবে তৈরি হবে না। আবার আপনি যেন একেবারে দেয়ালের আড়ালে পড়ে না যান, সে বিষয়টাও দেখতে হবে, নইলে নিজের গুরুত্ব বজায় থাকবে না।
তাই নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে আপনাকে নিজের জন্য এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, যাতে আপনার কাছে পৌঁছানোটা একেবারে সহজও না হয়, আবার একেবারে কঠিনও না হয়।
আপনার নিজের জন্য খুব ভাল একটা চেক এন্ড ব্যালান্স থাকতে হবে।
সিক্রেট # ৫
অন্যকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া
নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার জন্য সবচেয়ে কার্যকর সিক্রেটটি হচ্ছে অন্যকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া। অর্থাৎ আপনি যদি নিজে গুরুত্ব পেতে চান, তাহলে অন্যকেও যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, আপনার কাছ থেকে যদি কেউ যথেষ্ট গুরুত্ব না পায়, তাহলে সেও আপনাকে আপনার উপযুক্ত গুরুত্ব দিবে না।
তাই অন্যকে কোনভাবেই ছোট করে কথা বলা যাবে না এবং সবাইকে তাদের প্রাপ্য গুরুত্ব দেয়ার অভ্যাস নিজের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে।
সবাই যখন দেখবে, আপনি তাদেরকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন, তখন তারাও আপনাকে আপনার প্রাপ্য গুরুত্ব দিতে কার্পণ্য করবে না।
কিন্তু নিজে কাউকে গুরুত্ব না দিয়ে অন্যের কাছ থেকে শুধু গুরুত্ব পাওয়ার আশা করা যাবে না।
আজ এ পর্যন্তই, তবে এ বিষয়ে আপনার যদি আরও কিছু জানা থাকে তাহলে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
আরও ভালভাবে বিষয়টি বুঝতে নিচের ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত জানান।