সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আয় যেমনই হোক, সঞ্চয় বাড়ানোর সেরা জাপানি কৌশলে টাকা জমবে সহজে

Japan, kakibo, Money, Savings,
সবাই টাকা জমাতে চায়, তবে বাস্তবতা হল, সবার টাকা জমানোর ক্ষমতা কিন্তু সমান নয়। বেশি আয় করলেই যে বেশি সঞ্চয় করতে পারবেন, বিষয়টা মোটেই তেমন নয়। সেকারণে দেখা যায়, অনেকেই অল্প আয় করেও অনেক টাকা জমিয়ে ফেলে, আবার অনেকে প্রচুর আয় করেও এক পয়সাও জমাতে পারে না! 


তাই সঞ্চয়ের জন্য সবার আগে জানতে হবে, আপনার আসলে টাকা জমানোর প্রকৃত ক্ষমতা কতটুকু? আর এটা জানার জন্য আমরা ব্যবহার করব শতাধিক বছরের পুরনো জাপানি পদ্ধতি, যার নাম 'কাকিবো' (জাপানি ভাষার উচ্চারণ ভিন্ন হতে পারে)


এই জাপানি পদ্ধতিতে আপনি মাত্র ৪টি সহজ প্রশ্নের উত্তর দিয়েই যাচাই করতে পারবেন, আপনার আসলে সঞ্চয়ের ক্ষমতা কতটুকু। শুধু তাই নয়, কাকিবো  আপনার সঞ্চয়রে সামর্থ্য কিভাবে বাড়িয়ে তোলা যায়, সে পদ্ধতিও বাতলে দিবে।  


কাকিবো পদ্ধতির জন্ম  ১৯০৪ সালে, জাপানে। পারসোনাল ফিন্যান্স বা ব্যক্তিগত বাজেট ম্যানেজম্যান্টের জন্য এইপদ্ধতিটি আবিষ্কার করেন, জাপানি নারী সাংবাদিক হানি মটোকো। 


অনেকেই কাকিবোকে টাকা জমানোর একটি উপায় বলে মনে করেন, যা আসলে সঠিক নয়। সত্য কথা হল, কাকিবো আসলে টাকা জমানোর কোন পদ্ধতি নয়, এটা হল, আপনার টাকা জমানোর প্রকৃত ক্ষমতা বের করার উপায় এবং টাকা জমানোর সামর্থ্য বৃদ্ধির একটি ফর্মুলা। 


কাকিবো পদ্ধতিতে সফল হওয়ার জন্য আপনাকে ৩টি সহজ শর্ত মেনে চলতে হবে। এগুলো ঠিকমত মানতে পারলে আশা করা যায়, কাকিবো আপনার উপকারে আসবে। এই শর্ত গুলো হল,


১. কাকিবোতে ৪টি প্রশ্নের সাথে ৪ ধাপের একটি বাজেট প্লানারও সংযুক্ত আছে। তাই প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেয়ার পাশাপাশি আপনাকে বাজেট প্লানারটিও মেনে চলতে হবে।


২. এ পদ্ধতির চর্চা আপনাকে হাতে কলমে করতে হবে, কোন রকম প্রযুক্তি বা ডিজিটাল ডিভাইসের সাহায্য নেয়া যাবে না। এটার কারণ হল, আপনি যখন কোন কিছু নিজের হাতে লিখবেন, তখন তা আপনার ব্রেনের সাথে এটাচড হয়ে যাবে, ডিজিটালি যেটা সম্ভব নয়। আর যে কাজে আপনার ব্রেন সম্পৃক্ত হবে না, সে কাজে আপনার সফল হওয়ার চান্স প্রায় নেই বললেই চলে।


৩. আর শেষ শর্তটি হচ্ছে, কাকিবোতে আপনার আয় ব্যয় সম্পর্কিত কোন তথ্য লুকোনো যাবে না। অর্থাৎ আপনাকে আপনার আয় ব্যয় সম্পর্কে শতভাগ সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ তথ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। 


চলুন তাহলে এবারে জেনে নেই, কিভাবে কাকিবো পদ্ধতি আপনি কাজে লাগাবেন, সেই উপায়।



প্রথম প্রশ্নঃ আপনার কাছে এখন  কত টাকা আছে?


কাকিবো পদ্ধতি চর্চার  শুরুতেই আপনাকে যে প্রশ্নটির উত্তর দিতে হবে সেটি হল, আপনার কাছে এখন কত টাকা আছে। এখানে এখন বলতে বুঝানো হয়েছে, চলতি মাস। অর্থাৎ চলতি মাসে আপনার টোটাল ইনকাম কত টাকা?


এই ইনকাম মানে শুধু মাসের শুরুতে আপনার হতে থাকা টাকা নয়, বরং পুরো মাস জুড়ে আপনার হতে মোট কত টাকা আসবে সেটা হিসাব করতে হবে। 


কাকবোর সাথে যে বাজেট প্লানারটি আপনাকে মেনে চলতে হবে, সেখানকার ৪টি ধাপের প্রথমটি হচ্ছে 'ইনকাম'। তাই ইনকামের ঘরে আপনি লিখে ফেলুন, আপনার মোট মাসিক ইনকাম। 


মোট মাসিক ইনকাম হিসাবের জন্য, মাসের শুরুতেই আপনি যে সমস্ত আয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত, শুধু সেগুলোই লিখে ফেলবেন। হঠাৎকরে মাসের পরবর্তী সময়ে কোন আয় চলে আসলে, তখনই কেবল সেটা লিখবেন।


হিসাবের সুবিধার জন্য ধরে নিলাম, আপনার মাসিক বেতন ১ লাখ টাকা এবং এর বাইরে আপনার আর কোন আয় নেই, এবং হঠাৎ আয়ের কোন সম্ভাবনাও নেই।


সুতরাং আপনি আপনার কাকিবো বাজেট প্লানারের ইনকামের ঘরে লিখে ফেলুন, চলতি মাসের মোট আয় ১ লাখ টাকা। 



দ্বিতীয় প্রশ্নঃ আপনি মাসে  কত টাকা জমাতে চান?


কাকিবোর দ্বিতীয় প্রশ্নটি একেবারেই সোজা-সাপ্টা, আর এর উত্তরটিও খুবই সহজ। প্রশ্নটি হচ্ছে, আপনি মাসে কত টাকা জমাতে চান? আর উত্তরটি আপনি আপনার চাহিদা মত দিতে পারেন।


তবে মনে রাখবেন, এখানে আপনি উত্তর হিসেবে যত বড় অংকের কথা বলবেন, আপনাকে তত কঠোর ভাবেই কাকিবোর ধাপ গুলি মেনে চলতে হবে।


আবারো সহজে হিসাবের জন্য ধরে নিচ্ছি, আপনার মাসিক সঞ্চয় লক্ষ্য ১০ হাজার টাকা, কেননা একজন মানুষের জন্য  তার আয়ের নূন্যতম ১০% সঞ্চয় থাকাটা আদর্শ।


তো এবার আপনার  কাকিবো বাজেট প্লানারের টার্গেট বা লক্ষ্যের ঘরে লিখে ফেলুন ১০ হাজার টাকা। 



তৃতীয় প্রশ্নঃ আপনি মাসে  কত টাকা খরচ করেন?


কাকিবোর এই প্রশ্নটির উত্তর অনেকের কাছেই জটিল হয়ে উঠতে পারে। কেননা, মানুষের খরচের কোন শেষ নেই। তাছাড়া একেক মাসের খরচ একেক রকম। তাই মাসে আপনি কত টাকা খরচ করেন এই প্রশ্নের জটিল উত্তরকে সহজ করার জন্য কাকিবো বাজেট প্লানারে রয়েছে সুন্দর একটি ব্যবস্থা।


কাকিবো অনুযায়ী, আপনার সমস্ত  খরচ গুলোকে মাসের শুরুতেই বাজেট প্লানারের তৃতীয় ধাপে মোট দুটি মূল ক্যাটেগরিতে সাজাতে হবে। এর প্রথম ক্যাটেগরিটি হচ্ছে, আবশ্যিক খরচ, যেগুলো ছাড়া আপনি চলতে পারবেন না এবং যে খরচ গুলো  আপনাকে করতেই হবে। যেমন বাড়ি ভাড়া, বাচ্চাদের স্কুলের বেতন, ইউটিলিটি বিল, খাবার খরচ  ইত্যাদি।


এই ক্যাটেগরির প্রতিটি খাতের জন্য আপনার ব্যয় বরাদ্দ কাকিবো বাজেট প্লানারে লিখে ফেলুন। ধরে নিলাম, আপনার মাসিক আবশ্যিক খরচ ৬০ হাজার টাকা।


এবার আসুন দ্বিতীয় ক্যাটেগরিতে, যেটি হচ্ছে আপনার জীবন-যাপন ব্যয়। এই ক্যাটেগরিতে কমপক্ষে ৪টি ধাপ থাকতে হবে, তবে আপনি চাইলে ধাপের সংখ্যা প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়াতেও পারেন।


প্রথম ধাপটি হচ্ছে, লিভিং স্ট্যান্ডার্ড খরচ, যেখানে রয়েছে, আপনার লন্ড্রি বিল, যাতায়াত খরচ, আপনার পোশাকের খরচ, চিকিৎসা খরচ ইত্যাদি।


দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে, শিক্ষা এবং সংস্কৃতির খরচ। এ খাতে রয়েছে, আপনার বই পত্র কেনা, শিক্ষণীয় জায়গায় ভ্রমণ, বিভিন্ন প্রশিক্ষন গ্রহণের খরচ, সামাজিকতা মেনে চলার খরচ, যেমন কারও বিয়ের দাওয়াতে যাওয়া ইত্যাদি।


তৃতীয় ধাপ হচ্ছে, বিনোদনের খরচ। এখাতে রয়েছে আপনার রেস্তরায় খাওয়ার বিল, সিনেমা দেখার বিল, নেটফ্লিক্সের চার্জ, খেলা দেখার টিকিটের দাম ইত্যাদি।


আর চতুর্থ ধাপটি হচ্ছে, অন্যান্য। অর্থাৎ উপরের ধাপ গুলোতে যে খারচ গুলো ফেলা যাচ্ছে না, সেগুলো এই ধাপে যোগ করতে হবে। যেমন, খুব বেশি প্রয়োজন না থাকলেও লেটেস্ট মডেলের মোবাইল কেনা, বন্ধু বা কলিগদের দেখানর জন্য নতুন নতুন ফ্যাশেনবল ড্রেস কেনা, দামি ঘড়ি, জুতা, বেল্ট কেনা ইত্যাদি।


ধরে নিলাম, উপরের দ্বিতীয় ক্যাটেগরির চারটি ধাপ মিলিয়ে আপনার চলতি মাসে মোট খরচ হওয়ার কথা ৫০ হাজার টাকা। 


এবারে ফলাফল দেখার পালা। 

আপনি যেহেতু মাসের শুরুতেই কাকিবো বাজেট প্লানার নিয়ে বসবেন, তাই এই পর্যায়ে এসে কাকিবোর মাধ্যমে আপনি চলতি মাসে আপনার নিজের আয় এবং ব্যয়ের একটি পরিষ্কার চিত্র দেখতে পাবেন। অর্থাৎ কোন টাকা বাস্তবে খরচ হওয়ার আগেই আপনি জেনে যাবেন, কোথায় কোথায় আপনার টাকা কি পরিমাণে খরচ হতে চলেছে।


আর এটাই হচ্ছে কাকিবোর শক্তি। কেননা খেয়াল করে দেখুন, কাকিবো তৃতীয় প্রশ্নের উত্তরে আপনার খরচের হিসাব জানার আগেই, দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে আপনি কি পরিমাণ টাকা সঞ্চয় করতে চান, তা জেনে নিয়েছে। 


তো আসুন এবারে দেখি, আপনার চলতি মাসের কল্পিত বাজেটটির অবস্থা কি দাঁড়াল?


Kakibo, Japan, Money, Savings,
চলতি মাসে আপনার আয় ছিল, ১ লাখ টাকা। আর আবশ্যিক ব্যয়, মানে খাবার, বাড়ি ভাড়া, স্কুলের বেতন বাবদ ব্যয় ছিল ৬০ হাজার টাকা আর এর সাথে জীবন-যাপনের জনিত আরও ব্যয় ছিল ৫০ হাজার টাকা। 


তাহলে আপনি  চলতি মাসের মোট খরচ করতে যাচ্ছেন, ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। যা কিনা আপনার আয়ের চেয়েও ১০ হাজার টাকা বেশি!


অন্যদিকে আপনার চলতি মাসে সঞ্চয়ের লক্ষ্য ছিল ১০ হাজার টাকা।


কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সঞ্চয় তো দুরের কথা, আপনার খরচের পরিকল্পনা অনুযায়ী আপনি যদি চলতি মাসটি পার করতে চান, তাহলে আপনাকে উল্টো আরও ১০ হাজার টাকা ঋণ করতে হবে।


অর্থাৎ কাকিবো আপনাকে জানিয়ে দিল, চলতি মাসে আপনার সঞ্চয়ের কোন ক্ষমতাই নেই।


লাখ টাকা আয় করেও কেন আপনি একটি পয়সাও সঞ্চয়ের ক্ষমতা রাখেন না, কাকিবো তা আপানাকে এবার চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে!


আমাদের অনেকের জীবনে বাস্তবেও এমন অবস্থা হয়। কিন্তু এরকম অবস্থায় যেন আপনাকে পরতে  না হয়, সেজন্য কাকিবো আপনাকে সাহায্য করতে পারে, যদি আপনি এর চতুর্থ প্রশ্নটির জবাব দেন। 



চতুর্থ প্রশ্নঃ কিভাবে ব্যক্তিগত আর্থিক ব্যবস্থাপনার আরও উন্নতি করা যায়?


কাকিবোর শেষ এই প্রশ্নটিই আপনাকে বাঁচাতে পারে আর আপনার সঞ্চয়ের ক্ষমতাও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য, আপনাকে আবার তৃতীয় ধাপে ফিরে যেতে হবে, যেখানে আপনি আপনার ব্যায়ের খাত গুলো লিখেছিলেন।


প্রথম ক্যাটেগরির খাত গুলোতে আপনি হাত দিতে পারবেন না, কেননা এগুলো আবশ্যিক খরচ।


তাই আপনাকে দ্বিতীয় ক্যাটেগরির খাত গুলোকে ভালভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হবে যে, কোন খরচটা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়। কোন খরচটা আপনি না করলেও আপনার তেমন কোন ক্ষতি হবে না। আপনার কি লেটেস্ট মডেলের ফোনটা কিনতেই হবে? দ্বিতীয়বার ভেবে দেখুন।


এভাবে আপনি জীবন যাপনের খরচ গুলো  থেকে কাট-ছাট করে আপনার ভবিষ্যৎ খরচ কমিয়ে আনতে পারবেন আর আপনার সঞ্চয়ের লক্ষ্যও পূরণ করতে পারবেন।


এমনি করে কয়েক মাস প্রাক্টিস করার পর আপনি কাকিবোর প্রকৃত শক্তি বুঝতে পারবেন আর সেই সাথে আপনার সঞ্চয়ও বাড়তে থাকবে।


কয়েকমাস পর আপনি চাইলে প্রতিমাসে আপনার সঞ্চয়ের লক্ষ্যও বাড়িয়ে নিতে পারেন, আর সে অনুযায়ী আপনার কাকিবো চর্চা চালিয়ে যেতে পারেন।


আশাকরি এই কাকিবো পদ্ধতিটি আপনাদের টাকা সঞ্চয়ের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে।



বি.দ্রঃ এ ধরনের তথ্যগুলি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। তাই পাঠকের পাঠকালীন সময়ের সাথে পোস্টের তথ্যের পার্থক্য থাকতে পারে। ডিসক্লেইমার জানতে এবং পোস্ট ব্যবহারের আগে শর্তাবলী দেখে নিন।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Provident Fund এবং Gratuity আসলে কি? কিভাবে প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং গ্রাচ্যুইটির হিসাব করা হয়?

চাকরিতে বেতনের বাইরে আরও যেসব আর্থিক সুবিধাদি থাকে, তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রভিডেন্ট ফান্ড ( Provident Fund ) এবং গ্রাচ্যুইটি ( Gratuity )। কিন্তু এসব বিষয়ে অনেকেরই তেমন কোন সুস্পষ্ট ধারনা নেই। অনেকেই জানেন না, প্রভিডেন্ট ফান্ড (PF) এবং গ্রাচ্যুইটি (Gratuity) আসলে কি? এগুলো কিভাবে কাজ করে আর এখান থেকে কি ধরেনর সুবিধা পাওয়া যায়? প্রত্যেক চাকরিজীবীর জানা থাকা দরকার যে, কিভাবে প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং গ্রাচ্যুইটির হিসাব করা হয়? কিন্তু বাস্তবতা হল, নিজ চাকরিতে এসব সুবিধা থাকার পরও অনেকই বিষয়গুলো ভাল করে বোঝেন না। অথচ একজন স্মার্ট ক্যারিয়ারিস্ট হিসেবে প্রত্যেকের উচিৎ চাকরি সংশ্লিষ্ট প্রতিটি সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে ভাল করে জানা। আবার যারা চাকরিপ্রার্থী, তারাও এই বিষয় গুলো তেমন একটা বোঝে না। বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞাপনে প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং গ্রাচ্যুইটি সুবিধার কথা লেখা দেখে অনেকেই কিছু না বুঝেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, যা অনেক সময়ই তাদের প্রত্যাশার সাথে মেলে না। যেহেতু প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং গ্রাচ্যুটি হচ্ছে বেতনের বাইরে প্রাপ্ত আর্থিক সুবিধা, তাই এগুলো সম্পর্কে ভাল করে জানাটা জরুরী। তাই এসব বিষয় নিয়েই

যে ১০টি দক্ষতা থাকলে চাকরি পেতে কারও রেফারেন্স লাগে না

বলুন দেখি, চাকরি পেতে কোন জিনিসটি আপনার অবশ্যই থাকতে হবে? টাকা-পয়সা, মামা-চাচা-খালু, নাকি বড় বড় চটকদার ডিগ্রি?  সত্য বলতে আসলে এসব কিছুই না! যে কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েই আপনি মানানসই একটি ভাল চাকরি অনায়াসেই পেতে পারেন, যদি আপনার মধ্যে একটি মাত্র জিনিস থাকে! আর সেই জিনিসটির নাম হচ্ছে দক্ষতা বা স্কিল। এ যুগে চাকরি পেতে হলে একজন প্রার্থীর মধ্যে বেশকিছু দক্ষতা বা Skill অবশ্যই থাকতে হবে। হ্যা, মামা-চাচা-খালু কিংবা ঘুষ দেয়ার জন্য টাকা-পয়সা নয়, এই দক্ষতাই হচ্ছে এযুগে চাকরি পাওয়ার একমাত্র যোগ্যতা। আপনার মধ্যে যদি উপযুক্ত দক্ষতা থাকে, তাহলে চাকরি নিজেই আপনাকে খুঁজে নেবে। আপনাকে আর চাকরির পিছনে দৌড়াতে হবে না। কিন্তু আপনার মধ্যে যদি সময়ের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা না থাকে তাহলে, আপনি যতই জুতা ক্ষয় করেন না কেন, সহজে চাকরি পাবেন না। তাই সময়ের চাহিদা অনুযায়ী উপযুক্ত দক্ষতা বা Skill অর্জনের দিকে মনোযোগ দিন।  আর এজন্য ঠিক কি কি দক্ষতা এই যুগের চাকরির জন্য প্রয়োজন, সেটি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, কিভাবে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে এবং কিভাবে ভাল একটি চাকরি পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে শুরু থেকেই আপনার পর

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ শুরুর প্রথম পাঠ

কিভাবে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে ব্যবসা করতে হয়, সেটা অনেকেরই অজানা। বিশেষ করে নতুনদের জন্য শেয়ার বাজারে আগমনের পথটা সব সময়ই কঠিন। কেননা, শেয়ার বাজারে শুরুটা ঠিক কিভাবে করতে হয়, সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সবসময়ই অপ্রতুল।  শেয়ার বাজার বা স্টক মার্কেট সবসময়ই একটি উচ্চ ঝুঁকপূর্ণ জটিল জায়গা। তাই এখানে আসার আগে প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু পড়াশুনা করে নূন্যতম জ্ঞান নিয়ে আসা উচিত। তা না হলে, শেয়ার বাজারে এসে টাকা খোয়ানো কেউ ঠেকাতে পারবে না!  তবে শুরুতেই ভয় পাওয়ার কিছু নেই! কেননা বিখ্যাত বিনিয়গকারী পিটার লিঞ্চ যেমনটা বলেছেন, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের জন্য পৃথিবীর সব মানুষেরই যথেষ্ট বুদ্ধি-বিবেচনা বোধ রয়েছে। ক্লাস ফাইভের অংক করতে জানেন, এমন লোকও শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার জন্য উপযুক্ত। তবে কথা আছে। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের জন্য একজন বিনিয়োগকারীর অবশ্যই যথেষ্ট ধৈর্য, প্রচেষ্টা এবং পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করার ইচ্ছা থকতে হবে। আর তাহলেই কেবল একজন বিনিয়গকারী সফল হওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে।  তাই আজকের এই লেখায়, আমি শেয়ার  বাজারে বিনিয়োগ শুরু করার বেসিক ধাপ গুলো নিয়ে আলোচনা করব। এই বিষয় গুলো জানাটা সব বিনিয়ো

মাত্র ২ টাকা দিয়ে শুরু করে এক বছরেই লাখ টাকা জমানোর ক্রেইজি উপায়

টাকা জমানো মোটেই সহজ কোন কাজ নয়। অনেকেই নানাভাবে চেষ্টা করেও টাকা জমাতে পারে না। তাই টাকা জমানোর এই কঠিন  কাজটিকে সহজ করতে পৃথিবীতে আবিষ্কৃত হয়েছে নানা তত্ত্ব এবং উপায়। সেখান থেকেই আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব এমন  একটি উপায়, যেটা দিয়ে টাকা জমানোর কাজটা হয়ে যাবে অনেক সহজ, আর এটার শুরুটা করা যাবে মাত্র ২ টাকা দিয়ে। তবে এই পদ্ধতিটির আবিষ্কারক কে, সেটা আমার সঠিকভাবে জানা নেই, তাই কারও নাম উল্লেখ করতে পারলাম না। তবে আপনাদের কারও যদি জানা থাকে, তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। চলুন তাহলে আলোচনা শুরু করি। মাত্র ২ টাকা দিয়ে জমানো শুরু করে কিভাবে ১ বছরেই লাখপতি হওয়া যায়?  মাত্র ২ টাকা দিয়ে জমানো শুরু করে ১ বছরে লাখপতি হওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে, সেটি হল, আপনাকে আগে একটা নির্দিষ্ট তারিখ বেছে নিতে হবে, যেদিন থেকে আপনার একবছর গণনা শুরু হবে। বছরের যে কোন দিন থেকে আপনি শুরু করতে পারেন, তবে সেখান থেকে একটানা ৩৬৫ দিনের হিসাব আপনাকে ঠিক ভাবে রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, এ পদ্ধতির সফলতার জন্য আপনার একাগ্রতা এং নিষ্ঠার দরকার হবে। মাঝপথে ছেড়ে যাওয়া যাবে না। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঠিক ভাবে লেগে থ

শেয়ার ব্যবসায় মুনাফা করার অব্যর্থ টেকনিক

শেয়ার বাজার বা Stock Market - এ বিনিয়োগ করে ধরা খেতে না চাইলে আপনাকে অবশ্যই কিছু বেসিক নিয়ম মেনে বিনিয়োগ করতে হবে। কেননা, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে যারা ধরা খেয়েছেন, তাদের একটা বড় অংশ এই মার্কেটে বিনিয়োগের বেসিক নিয়ম গুলো জেনেই বিনিয়োগ করে ফেলেছিলেন। শেয়ার বাজার একটি উচ্চ ঝুকি পূর্ণ স্পর্শকাতর জায়গা। তাই এখানে বিনিয়োগ করতে হয় বুঝে শুনে, গুজবের উপর ভিত্তি করে নয়। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের কিছু বেসিক নিয়ম আছে, যেগুলো বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীই জানেন না অথবা বিনিয়োগের সময় সেগুলো প্রয়োগ করেন না। এরফলে তাদের বিনিয়োগ থেকে যায় ঝুঁকিপূর্ণ এবং বাজারের সামান্য উত্থান-পতনেই তাদের বিনিয়োগ নেমে আসে শুন্যের কোটায়। তাই শেয়ার বাজারে ভাল কোম্পানিতে দীর্ঘ মেয়াদে নিরাপদ এবং টেকসই বিনিয়োগ করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই বেশ কিছু বেসিক বিষয় মাথায় রাখতে হবে। কিন্তু কি সেই বিষয় গুলো? - এই নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে এই পোস্টে।  আজকের এই লেখায় আমি আপনাদের জানাব, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের এমন ৫ টি অব্যর্থ টেকনিক, যেগুলো না জেনে বিনিয়োগ করা কখনই উচিৎ হবে না। আর এই টেকনিক গুলো সার্বজনীন, অর্থাৎ এগুলো যেকোন দেশের যে

ক্রেডিট কার্ডের সুদ হিসাবের ভয়ঙ্কর পদ্ধতি এবং চক্রবৃদ্ধির সুদের ফাঁদ থেকে বাঁচার উপায়

আপনি মানেন আর না মানেন, এটা সত্যি যে, ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড (Credit Card) অনেকের জীবনেই ধ্বংস ডেকে এনেছে। ক্রেডিট কার্ডের উচ্চ সুদের ভয়ঙ্কর ঋণের ফাঁদে পড়ে অনেকের জীবনেরই আজ ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এর অন্যতম একটি কারণ, ক্রেডিট কার্ডের সুদ হিসাবের ভয়ঙ্কর পদ্ধতি। অনেকেই জানেন না, ব্যাংক গুলোতে ঠিক কি পদ্ধতিতে ক্রেডিট কার্ডের সুদ হিসাব করা হয়? আবার ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো আসলে কি, সেটাও অনেকে জানে না। অথচ একটু বুদ্ধি খাটিয়ে স্মার্টলি ব্যবহার করতে পারলেই কিন্তু Credit Card থেকে অনেক সুবিধা নেয়া যায়।  যাইহোক, ক্রেডিট কার্ড আসলে কি এবং Credit Card ব্যবহার করতে গিয়ে কেন এবং কিভাবে মানুষ চক্রবৃদ্ধি হারে সুদের গ্যাড়াকলে আষ্টেপৃষ্ঠে আটকে পড়ে, সেইসব রহস্যই ভেদ করার চেষ্টা করেছি আজকের এই পোস্টে।  Credit Card স্মার্টলি ব্যবহার করার জন্য এর সাথে সম্পর্কিত সকল তথ্য সঠিক ভাবে জানা প্রয়োজন। বিশেষ করে বিভিন্ন Bank- এর ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার এবং নানা ধরনের চার্জ গুলো সম্পর্কে না জানলে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। কেননা এই তথ্যগুলো না জানা কিংবা গুরুত্ব না দেয়ার কারণেই ক্রেডিট কার্ড মান

আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে সমাজে নিজের গুরুত্ব বাড়িয়ে তোলার উপায়

শুধুমাত্র বিপুল টাকা-পয়সা কিংবা সম্পদের পাহাড়ের মালিক হলেই কেউ অন্যের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে না। নিজেকে অন্যদের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ করে তলার জন্য ব্যক্তির মধ্যে বিশেষ কিছু গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকতে হয়। এসব গুণ বা বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে পারলেই কেবল আপনি নিজেকে অন্যের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে পারবেন।  জীবনে সফল হতে হলে, অবশ্যই নিজের গুরুত্ব বাড়াতে হবে এবং অন্যদের মাঝে নিজেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে জায়গা করে নিতে হবে। আজকের পৃথিবীর সফল ব্যক্তি যারা, তারাও সফল হওয়ার অনেক আগে থেকেই নিজেদেরকে সমাজের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছেন, যা তাদেরকে আজকের এই পর্যায়ে আসতে সাহায্য করেছে।  জীবনে সফল হওয়ার জন্য কেউ যখন কাজ করতে থাকে, ঠিক তখন থেকেই তাকে নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হয়। তা না হলে পরবর্তীতে, নিজেকে সামজের অন্যদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলাটা অনেক কঠিন হয়ে যায়। তাই নিজেকে সবার মাঝে ধনী তথা সফল ব্যক্তিদের মত গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে চাইলে, এখন থেকেই আপনাকে কাজ শুরু করে দিতে হবে। কিন্তু কিভাবে নিজের মধ্যে ধনীদের মত আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলে নিজেকে সবার মাঝে গুরুত্বপূর্ণ করে

এ যুগের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে কর্মীদের বেতন নির্ধারণ করে

আপনি কি জানেন, বেসরকারি চাকরিতে কিভাবে আপনার বেতন নির্ধারণ করা হয়?  নিয়োগকর্তা বা কোম্পানিগুলো ঠিক কি পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত নেয়, আপনার বেতন কত হবে? কেন একই যোগ্যতা থাকার পরও ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানি ভিন্ন ভিন্ন অংকের বেতন দেয়? কিভাবে আপনার চেয়ে ১০ বছরের ছোট ছেলেটা আপনার চেয়ে বেশি বেতনে জয়েন করল? বেতনের ক্ষেত্রে সিনিয়রিটি নাকি দক্ষতা, কোনটিকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়? এসব প্রশ্নের  উত্তর নিয়েই আজকের এই পোস্ট।  আজকে এখানে আমি ব্যাখ্যা করেছি বেতন নির্ধারণের মূল ৫ টি ফ্যাক্টর, যেগুলো বেতন নির্ধারণের ক্ষেত্রে সারাবিশ্বেই সাধারনভাবে চর্চা করা হয়। কোন একটি কোম্পানিতে কার বেতন কত হবে, সেটা আসলে নির্ভর করে অনেকগুলো ফ্যাক্টরের ওপর।  আর নিয়োগকারী কোম্পানি কোন ফ্যাক্টরকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সেটাও আপনার বেতনের অংকে প্রভাব ফেলতে পারে। যেকারনে একই সমান অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার পরও দুটি ভিন্ন কোম্পানিতে দু’জনের আলাদা অংকের বেতন হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। তবে একটি আদর্শ কোম্পানিতে সাধারণত কিভাবে কোন এমপ্লোয়ির বেতন নির্ধারণ করা হয়, সেটা জানা থাকলে ব্যাপারটা বুঝতে সবার সুবিধা হবে। আসুন দেখা যাক কিভাবে সেটা

বাংলাদেশে স্বর্ণে বিনিয়োগ আসলে কতটা লাভজনক?

বাংলাদেশে সোনা বা স্বর্ণে বিনিয়োগ করা সত্যিকার অর্থেই আসলে কতটা লাভজনক এবং এদেশে  স্বর্ণ কিনে রেখে দিলে আপনার ভবিষ্যৎ কি  সেটা জানার জন্য সম্প্রতি আমি বেশকিছু খোঁজ-খবর করি এই ব্যাপারে।  এটা করতে গিয়ে দেখলাম, এই বিষয়টাতে বাংলাদেশে অনেক হিডেন ব্যাপার-স্যাপার আছে, যা সবার পক্ষে সাধারণভাবে জানা কখনই সম্ভব নয়।  এমনকি সোনা বা স্বর্ণ কিনতে গেলেও দোকানদাররা আপনাকে এসব কথা জানাবে না, কিন্তু যখনই বেচতে যাবেন, তখনই বুঝবেন স্বর্ণে বিনিয়োগ করাটা আপনার কতটা সঠিক কিংবা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।  তাই  স্বর্ণ কিনে রেখে দিলে বাংলাদেশে আপনার ভবিষ্যৎ কি - সে বিষয়টি নিয়েই আজকে আলোচনা করব। তবে বিষয়টি ভালভাবে বোঝার জন্য, বাংলাদেশের বিষয়াদি আলাপের আগে, আসুন জেনে নেই, স্বর্ণে বিনিয়োগের কিছু বেসিক বিষয় এবং আন্তর্জাতিক মার্কেটে স্বর্ণে বিনিয়োগ করার পুরো চক্রটা ঠিক  কিভাবে  কাজ করে, সে সম্পর্কে।  কেন স্বর্ণে বিনিয়োগ করা হয়?  ডলার হোক কিংবা টাকা , যেকোন মুদ্রার মান বা ভ্যালু যখন কমতে থাকে , তখন সারা বিশ্বেই মানুষজন বিকল্প এসেট ক্লাস হিসেবে সোনা বা স্বর্ণের মত দামী ধাতুতে বিনিয়োগ করে। বিনিয়োগের জন্য দামী এবং প্রয়োজনীয় ধ